
রংপুর সংবাদদাতা:
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার কৃতি সন্তান শিক্ষাবিদ ইঞ্জিনিয়ার জমিদার রহমান। যাঁর কর্মময় জীবনে নিজের মেধা ও দক্ষতা দিয়ে একের পর এক সফলতার অর্জন করেছেন। অর্জন করেছেন জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানকেও পৌঁছে দিয়েছেন অনন্য মর্যাদায়।
তিনি জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে পেয়েছেন কারিগরি পর্যায়ে প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে জাতীয়ভাবে তিন তিনবার সম্মাননা পুরস্কার। এছাড়া যখন যে প্রতিষ্ঠানে প্রধান হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন সে প্রতিষ্ঠানও পেয়েছে জাতীয়/বিভাগীয় পর্যায় শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান/প্রতিষ্ঠান প্রধানের পুরস্কার।
ইঞ্জিনিয়ার জমিদার রহমান রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের উমর গ্রামের সন্তান। তিনি ১৯৯৪ সালে ডুয়েট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অনার্স মার্কসহ ডাবল ষ্টান্ড করেন। পরে ২০০১ সালে বাংলাদেশ ইনষ্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি) রাজশাহীতে (বর্তমান রুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে সহকারি অধ্যাপক (উন্নয়ন) পদে চাকুরীতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।
এরপর ২০০৪ সালে পঞ্চগড় জেলার টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে চাকুরীতে যোগদান করেন। সেখানে ১ বছর কর্মজীবন শেষে ২০০৫ সালে কুড়িগ্রাম টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে বদলী হয়ে আসেন। এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদান করে ২০১৫ সালে কারিগরি পর্যায় সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলেন। এ প্রতিষ্ঠানটি অধ্যক্ষ জমিদার রহমানের দক্ষতার সাথে পরিচালিত করেন।
২০১৮ সালে পাবনা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে বদলী হয়ে যান। সেখানেও তিনি মেধা, দক্ষতা ও বিচক্ষণতার সাথে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে সবার দৃষ্টি আর্কশন করেন। পরবর্তীতে তিনি নিজ জেলা রংপুর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে অধ্যক্ষের দ্বায়িত্ব গ্রহণ করে আধুনিকভাবে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যোগদানের অল্প সময়ে এ প্রতিষ্ঠানটি সবার আলোচনায় চলে আসে। এ বছর প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়ভাবে শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পুরস্কার পায় এবং অধ্যক্ষ বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ হন। সম্প্রতি ঢাকায় গিয়ে অধ্যক্ষ জমিদার রহমান সম্মাননা পুরস্কার গ্রহণ করেন। পুরস্কার অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি ভার্চ্যুয়ালে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। পুরস্কার তুলে দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল ইসলাম এমপি। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানটির ডিজিটাল সার্ভে, ৫০ এমবিপিএস, বালক মেসেজিং সিস্টেম চালু করা হয়েছে ও মাস্টার প্লান তৈরীর কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এছাড়াও বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে ইঞ্জিনিয়ার জমিদার রহমান ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২২ সালে বিভাগীয় শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান ( কারিগরি) হিসেবে এবং ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন। তিনি কর্মকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠান (কারিগরি) ও প্রতিষ্ঠান প্রধান (কারিগরি) হিসেবে জাতীয় ও বিভাগীয় পর্যায় ৩ বার পুরস্কার পেয়ে হ্যাট্রিক করেন।
এছাড়াও সফল অধ্যক্ষ হিসেবে বিভিন্ন সামাজিক, মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক সংগঠন ইঞ্জিনিয়ার জমিদার রহমানকে সম্মাননা পুরস্কার দিয়েছে। এর মধ্যে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত গোল্ডেন এ্যাওয়ার্ড, মাদার তেরেসা গোল্ডেন এ্যাওয়ার্ড, বিচারপতি এস এম মোরশেদ স্মৃতি গোল্ডেন মেডেল, হিউম্যান রাইটস পিস এ্যাওয়ার্ড, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্মাননা। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে স্বাধীনতা স্মৃতি এ্যাওয়ার্ড ও মুজিববর্ষ সম্মাননা স্মারকেও পুরস্কৃত হন ইঞ্জিনিয়ার জমিদার রহমান।
সাংসারিক জীবনে তিনি ৩ সন্তানের জনক। এক ছেলে আমেরিকার ভার্জিনিয়া টেক ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সায়েন্সে ও ইঞ্জিনিয়ারিং এ পিএইচডিতে অধ্যায়নরত। অন্য ছেলে ৩৮তম বিসিএস ক্যাডারে নিয়োগ পেয়ে পিডব্লিউতে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। ছোট মেয়ে রংপুর সরকারি গার্লস হাইস্কুলে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।