
শেরপুর সংবাদদাতা:
শেরপুর পৌরসভা পরিবেশ বান্ধব শহর হিসেবে যাত্রা শুরু করেছে। এ লক্ষে বুধবার সকালে শহরের অষ্টমীতলা মৃগী নদীর পাড়ে প্রায় দেড় শত বছরের প্রাচীণ পৌরসভার নাগরিকদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ‘স্যানিটারী ল্যান্ড ফিল’ উদ্বোধন করা হয়েছে।
এ ‘স্যানিটারী ল্যান্ড ফিল’টি উদ্বোধন করেন পৌর মেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটন। এসময় পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নাছিরুল আলম নাহিদের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী সভায় বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, প্রকৌশলী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রতিদিন ‘স্যানিটারী ল্যান্ড ফিল’ থেকে ৩১ মেট্রিকটন বর্জ্য অপসারণ করা যাবে বলে পৌর কর্তপক্ষ জানিয়েছেন।
শেরপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান রেজাউল করিম জানান, শেরপুর শহরের অষ্টমীতলা মৃগি নদীর পাড়ে ২.৭৬ একর জমিতে এ বর্জ্য অপসারণ কেন্দ্রটি স্থাপন করতে ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা। টএওওচ প্রকল্পে দেশের ৩৫টি পৌরসভায় এ বর্জ্য অপসারণ কেন্দ্রটি চালু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আমাদের এ প্রকল্পটি উদ্বোধন করা হলো। ধ্রুব ট্রেড এজেন্সি এ প্রকল্পটি নির্মাণ করছে।
তিনি আরও বলেন, এ প্রকল্পটি চালু হলেও আমাদের জনবল ও বর্জ্য ফেলার গাড়ি স্বল্পতা রয়েছে। অচিরেই তা সমাধান করা হবে। ভবিষ্যতে এ প্রকল্প থেকে গ্যাস ও বিদ্যুতের মতো জ¦ালানি উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে, যা দিয়ে পৌরসভার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি হবে।
শেরপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক নয়ন কুমার রায় জানান, প্রকল্পটি চালু হওয়ায় শেরপুর জেলা শহর একটি পরিবেশবান্ধব শহরে রূপ নিবে। এ ‘স্যানিটারী ল্যান্ড ফিল’ প্রকল্পটি দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। একটি হচ্ছে পঁচনশীল আরেকটি হচ্ছে অপঁচনশীল বর্জ্য হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। পঁচনশীল বর্জ্যগুলো ‘স্যানিটারী ল্যান্ড ফিল’ প্রকল্পের ভিতরেই নষ্ট করে দেওয়া হবে। আর অপঁচনশীল বর্জ্যগুলো যেমন পলিথিন, পানির বোতলসহ বিভিন্ন প্রকার অপঁচনশীল বর্জ্যগুলো বাছাই করে সেসব উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করা হবে। এতে শেরপুর পৌরসভার রাজস্বও বৃদ্ধি পাবে। আমরা প্রকল্পটি পরিদর্শন করেছি এবং পরিবেশ যাতে দূষিত না হয় সেগুলো দেখভাল করে শেরপুর পৌরসভাকে পরিবেশ সনদপত্র প্রদান করেছি।
শেরপুর নাগরিক ফোরাম জনউদ্যোগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ বলেন, শেরপুর শহরের ভিতরে যে আবর্জনার স্তুপ থাকতো, মানুষ দুর্গন্ধে সেসব রাস্তা দিয়ে যেতে পারতো না এজন্য নাগরিক সমাজ বিভিন্ন সময় মানববন্ধন সহ বিভিন্ন দাবি করে আসছিল। পৌর কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতায় প্রকল্পটি চালু হওয়ায় পৌরবাসী দূষিত পরিবেশ থেকে রক্ষা পাবে বলে আমি আশা করছি।
পৌর মেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটন বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃশ্যমান উন্নয়নের যে চিত্র সারাদেশে ফুটে উঠেছে তা থেকে শেরপুর পৌরসভাও পিছিয়ে নেই। আমরা পৌরশহরকে আলোকিত করতে রাস্তা-ঘাট নির্মাণ করেছি। রোড লাইটের মাধ্যমে সারা শহরকে আলোকিত করেছি। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ করার জন্য যাদুঘর নির্মাণ করেছি। জলবদ্ধতা শেরপুর পৌরসভায় একটি প্রধান সমস্যা ছিলো যা ইতিমধ্যে আমরা আশি ভাগ সমাধাণ করতে পেরেছি। ‘স্যানিটারি ল্যান্ড ফিল’ প্রকল্পটি চালু হওয়ার পর শেরপুর পৌরসভা একটি পরিবেশবান্ধব শহর হিসেবে রূপ নিবে।