Date: May 01, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / শ্রীপুরে ট্রেন-শ্রমিকবাহী বাসের সংঘর্ষে নিহত ৪ , আহত ২০ - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

শ্রীপুরে ট্রেন-শ্রমিকবাহী বাসের সংঘর্ষে নিহত ৪ , আহত ২০

July 25, 2022 06:43:59 AM  
শ্রীপুরে ট্রেন-শ্রমিকবাহী বাসের সংঘর্ষে নিহত ৪ , আহত ২০

শ্রীপুর (গাজীপুর) সংবাদদাতা:
গাজীপুরের শ্রীপুরের জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ রেল সড়কের বরমী ইউনিয়নের মাইজ পাড়া লেভেল ক্রসিং এলাকায় ট্রেনের সাথে গার্মেন্টস্ শ্রমিকবাহী বাসের সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরও আহত হয়েছে ২০জন। আহত ও নিহতরা বাস ও ট্রেনের যাত্রী ছিলো। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

রোববার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে এ দুর্ঘটনায় ঘটে বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর রেলস্টেশনের মাস্টার হারুন অর রশিদ। ঘটনার পর গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

শ্রীপুর রেলস্টেশনের মাস্টার হারুন অর রশিদ জানান, ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী বলাকা কমিউটার ট্রেনটি সকাল ৭টা ৫মিনিটে শ্রীপুর থেকে ছেড়ে যায়। ট্রেনটি কাওরাইদ স্টেশন ও সাতখামাইর স্টেশনের মাঝামাঝি এলাকায় মাইজপাড়া ক্রসিং পার হওয়ার সময় শ্রমিকবাহী বাসের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই বাসযাত্রী প্রিয়া নামক এক নারী নিহত ও ১৫/২০জন বাস ও ট্রেনের যাত্রী আহত হয় এবং ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে বসে থাকা দুই যাত্রীর মৃত্যু হয়।

গাজীপুর রেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শহিদুল্ল্যাহ জানান, এঘটনায় ঘটনাস্থলে প্রিয়া নামে এক নারী শ্রমিক নিহত হয়েছে। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত দু’জনকে ট্রেনে করে চিকিৎসার ময়মনসিংহে নেয়ার পথে মারা যায়। তাদের মরদেহ গফরগাঁও রেলস্টেশনে রেল পুলিশে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বাস চালক তাজুল ইসলামকে আহতবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা গেছে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালসহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গফরগাঁও রেলওয়ে পুলিশের ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম জানান, শ্রীপুরে বাস ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত দুইজনের মরদেহ বলাকা কমিউটার ট্রেন থেকে নামিয়ে রেখে দুটো জয়দেবপুর রেলওয়ে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গাজীপুর জেলা প্রশাসক মো. আনিসুর রহমান জানান, ট্রেন বাস দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। হতাহতের সংখ্যাও অনেক। নিহত পরিবারকে মরদেহ দাফনের জন্য ২০হাজার টাকা ও আহতদের চিকিৎসা ব্যয় বাবদ ১০হাজার টাকা দেয়া হবে। এঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বাস-ট্রেনের সংঘর্ষের সময় লেভেল ক্রসিং এ দায়িত্বে থাকা তিনজন গেইট ম্যানের কেউই ঘটনাস্থলে ছিলেন না বলে জানা গেছে। ঘটনার পরও তাদের কাউকেই পাওয়া যায়নি। গেইট ম্যানের অবহেলার কারণে ঝড়ে গেছে চারটি প্রাণ।

দুর্ঘটনায় স্থলের পাশে বরমী ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম পুলিশ গণেশ রবি দাস এর বাড়ি। তিনি জানান, আল আমিন, মাহমুদ উল্ল্যাহ্ নামের দুজন এখানে গেইট ম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। সম্প্রতি এক গেইট ম্যান ট্রেনের নিচে কাটা পরে মারা গেলে পরে নতুন আরও একজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিন শিফটে দিনে আট ঘন্টা করে তাদের দায়িত্ব পালনের কথা থাকলেও তারা সঠিক সময়ে দায়িত্ব পালন করতেন না। প্রতিদিনই সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই গেট এলাকা ছেড়ে চলে যান তারা। আবার সকাল ৯টার পর লেভেল ক্রসিং এলাকায় দায়িত্ব আসেন। সবসময়ই তারা দায়িত্বে অবহেলা করে।

স্থানীয় অপর ব্যক্তি আলিম উদ্দিন জানান, গেইটম্যানরা ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করেন না। তারা গেইট ছেড়ে আশপাশে আড্ডায় থাকেন। ট্রেন আসলেও অনেকসময় নামানো হতো না লেভেল ক্রসিং এর বার। এ কারণেই এ সড়কে প্রায় সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে।