Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ময়মনসিংহ / স্কুলে শিক্ষক থাকলেও, শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নগণ্য - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

স্কুলে শিক্ষক থাকলেও, শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নগণ্য

April 18, 2025 08:54:05 PM   উপজেলা প্রতিনিধি
স্কুলে শিক্ষক থাকলেও, শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নগণ্য

দৌলত হোসেন:
কাগজ-কলমে শিক্ষার্থী থাকলেও বাস্তবে চিত্র ভিন্ন। স্কুলে শিক্ষক থাকলেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি একেবারেই নগণ্য। অলস সময় কাটে শিক্ষকদের। এমনি এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেখা মেলে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নারী শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৪ সালে এটি এমপিওভুক্ত হয়। বিদ্যালয়ের তথ্য মতে, বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫০ জন এবং শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ১৫ জন।

তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাগজ-কলমে শিক্ষার্থী ১৫০ জন থাকলেও বাস্তবে চিত্র ভিন্ন। বিদ্যালয়টির একটি পাকা ভবন ও একটি টিনশেড ভবন রয়েছে। প্রতিটি ভবনেই ক্লাসরুম থাকলেও শ্রেণিকক্ষে মাত্র ২ থেকে ৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত দেখা যায়। ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত মোট উপস্থিত শিক্ষার্থী পাওয়া যায় মাত্র ১৭ জন। শুধু অফিসকক্ষে কয়েকজন শিক্ষককে বসে থাকতে দেখা যায়। এই চিত্র একটি প্রতিদিনকার দৃশ্য।

সম্প্রতি বিদ্যালয়টির সাবেক প্রধান শিক্ষক আবদুল করিম মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, দীর্ঘদিন যাবৎ কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী ও জমি না থাকায় বহিরাগত শিক্ষার্থীদের দিয়ে খাতাপত্র ঠিক রেখে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করা হচ্ছে। নীতিমালা অনুযায়ী .৫০ শতক অখণ্ড জমির প্রয়োজন হলেও বর্তমানে বিদ্যালয়ের নামে রয়েছে মাত্র .২৫ শতক অখণ্ড জমি, যা এমপিও নীতিমালা-২০২১ এর পরিপন্থী।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী ও জমি না থাকা সত্ত্বেও মোটা অঙ্কের উৎকোচ দিয়ে মাধ্যমিক স্তরের স্বীকৃতি নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত মাত্র ১২ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। ৯ম ও ১০ম শ্রেণিতে বহিরাগত শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন করিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করানো হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ১৫ জন শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত আছেন, যাদের সরকারিভাবে বেতন-ভাতা প্রদান করা হচ্ছে প্রায় ২,০০,০০০ (দুই লাখ) টাকা, যা সরকারের আর্থিক ক্ষতির কারণ বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে নয়াবিল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, “কখনো শিক্ষার্থী কম থাকে, কখনো বেশি থাকে” -এই বলে তিনি দায় এড়িয়ে যান।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর কবির বলেন, “আমি এ বিষয়ে অবগত নই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”