
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ আমাদের আমানত। আর আমানতের খেয়ানত যারা করে, তারা মুমিন নয়।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঠাকুরগাঁও হরিপুর বিএনপির আয়োজনে শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর আমরা এখন মুক্ত স্বাধীন। এ স্বাধীনতা ততক্ষণ থাকবে যতক্ষণ আমরা তা ধরে রাখতে পারবো। আমাদের দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সবাই মিলেমিশে বসবাস করবে। তাদের জান-মাল নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের সকলের। কারণ তারা আমাদের আমানত। আমানতের খেয়ানত যারা করে, তারা মুমিন নয়। তাদের যেন কেউ ক্ষতি করতে না পারে সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখার কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, এ আন্দোলনে খুনি হাসিনা হাজারো মানুষ খুন করেছে। বিএনপি নেতা, ছাত্র-জনতাকে নির্যাতন করেছে। নির্যাতনের আয়নাঘর বানিয়েছে। মনে রাখবেন, সীমা লঙ্ঘনকারীকে আল্লাহ্ পছন্দ করেন না। তিনি যখন যাকে চান আমির বানান আবার যখন যাকে চান ফকির বানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, আগস্ট মাসের ৪ তারিখে চিন্তাও করতে পারিনি ৫ তারিখে রাস্তায় এত মানুষ নেমে আসবে আর হাসিনার পতন ঘটাবে। সব শেষে জনতার ভয়ে হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, কারো ওপর অন্যায় নির্যাতন করবেন না। নয়তো আওয়ামী লীগের মতো পরিণতি হবে। আপনারা কেউ তা চান না। যেমন হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়ে করুণ পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সামনে নির্বাচন হবে। কবে হবে তা জানি না। তবে এটা ঠিক, আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনের সিস্টেমকে ধ্বংস করে দিয়েছে। যার কারণে আপনারা কেউ এতদিনে ভোট দিতে পারেননি। যোগ করে ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সবাই ভালো মানুষ ও নিরপেক্ষ মানুষ। কোন দলের রাজনীতি করেন না। আপনাদের ধৈর্য ধরতে হবে, সবাই শান্ত থাকুন। আপনাদের দাবি এখানে যেন আমরা ধানের শীষ প্রতীক দিই। কাজেই ধানের শীষকে শক্তিশালী করুন। কারিগরি নির্বাচন সামনে আসছে। আমরা দেশকে ভালো রাখার সুযোগ যেন না হারাই।
সীমান্ত হত্যা নিয়ে ফখরুল বলেন, এখানে পাশেই ভারত সীমান্ত। আমরা ভালোভাবে থাকতে চাই। আমাদের ওপর অন্যায় করা হলে আমরা প্রতিবাদ করবো।
এ সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লড়াই সংগ্রামে ত্যাগের কথা তুলে ধরেন এবং তাদের জন্য দোয়া চান।
জনসভায় তীব্র রোদ উপেক্ষা করে ঈদগাহ মাঠ কানায় কানায় ভরপুর ছিলো। উপজেলার বিএনপির নেতাকর্মী ও বিএনপি সমর্থিত ছাত্র-জনতা দলে দলে এসে যোগদান করেন।