Date: May 01, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / সালিশে জরিমানার টাকায় হবে বিদ্যালয়ের মন্দির উন্নয়ন কাজ - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

সালিশে জরিমানার টাকায় হবে বিদ্যালয়ের মন্দির উন্নয়ন কাজ

May 09, 2023 07:38:23 PM   উপজেলা প্রতিনিধি
সালিশে জরিমানার টাকায় হবে বিদ্যালয়ের মন্দির উন্নয়ন কাজ

কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) সংবাদদাতা:
জরিমানার টাকায় হবে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার বিদ্যালয় এবং মন্দিরের উন্নয়ন। এমনটাই শোনা যাচ্ছে লোকমুখে। এ খবরে এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলার পিড়ার বাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সাংবাদিকবৃন্দ সরজমিনে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পায়।

জানা যায়, এলাকার উপানন্দ বৈদ্যের ছেলে কলেজ শিক্ষার্থী শান্তি বৈদ্য (২২) কে, প্রতিবেশী সুনীল চন্দ্র হালদারের ছেলে ৭ম শ্রেণীর ছাত্র সুদিপ্ত হালদার (১২) সহ বন্ধুদের সংঘবদ্ধ ফ্রি-ফায়ার গেম খেলাকে কেন্দ্র করে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন চুরির অপবাদ দিয়ে গ্রাম্য সালিশ বৈঠকে ৬২ হাজার টাকা জরিমানা ও মারপিট করা হয়। সালিশ বৈঠকের সভাপতি এলাকার মোড়ল ভরত বৈদ্যের নির্দেশে উক্ত বৈঠকে উপস্থিত শতাধিক জনতার মধ্যে সাদুল্লাপুর ইউপি ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য দুলাল বাড়ৈ, সাবেক ইউপি সদস্য শান্তি মল্লিক, সাবেক ইউপি সদস্য অমল হালদার, শিক্ষক বিপুল বালা ও বিমল সিকদার সহ ৫ জন বোর্ড বসিয়ে উক্ত জরিমানা নির্ধারন করে। পরে আদায়কৃত ৬২ হাজার টাকা ১৩১ নং পশ্চিম পিড়ারবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিতা জয়ধর ৪০ হাজার, অত্র বিদ্যালয়ে ৫ হাজার, পিড়ার বাড়ী শনি মন্দিরে ২ হাজার, সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরে ৩ হাজার, মনোরঞ্জন গাইন ১০ হাজার ও দুলাল মল্লিক ২ হাজার টাকা করে ভাগাভাগি কয়ে নেয়। এবং হারানো মোবাইল ফোনটি মনি মোহন বাড়ৈর বাড়ী থেকে উদ্ধার করে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ। এ ঘটনায় উপানন্দ বৈদ্য বাদী হয়ে দুলাল বাড়ৈ ও অনিতা জয়ধর সহ ৬ জন কে বিবাদী করে থানায় একটি অধিযোগ দায়ের করেন।

ভুক্তভুগী উপানন্দ বৈদ্য সাংবাদিকদের বলেন, আমি গরিব, পিড়ারবাড়ী হাইস্কুলের নিয়োগ সংক্রান্ত নানাবিধ অনিয়ম দুর্তিতি মামলার বাদী আমার ছেলে শান্তি বৈদ্য ও বিশ্বজিৎ বৈদ্য। যে কারণে নাটক সাজিয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে আমার কলেজ পডুয়া ছেলেটিকে মারপিট করে পা ধরিয়ে হুমকীধামকি দিয়ে চুরির কাথা স্বীকার করিয়ে জোরপূর্বক ৬২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে দুলাল মেম্বর অনিতা ম্যডামসহ এলাকার কয়েকজন মোড়ল। আমি সুদে ব্যাজে টাকা এনে দুলাল মেম্বরের হাতে জারিমানার টাকা তুলে দিয়েছি। এর মাধ্যমে সমাজে আমাকে হেয় করা হয়েছে। এ ঘটনা কাউকে জানালে রাস্তায় বের হতে দেবে না বলে হুমকি দেয় দুলাল মেম্বর ও তার লোকজন। আমি তদন্তপূর্বক প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ ঘটনার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানাই।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য দুলাল বাড়ৈ জানান, আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন।

ভরত বৈদ্য বলেন, এরকম জরিমানা মাঝে মধ্যে করতে হয় না হলে সমাজ ঠিক থাকে না।

জরিমানা থেকে পাওয়া টাকা প্রতিষ্ঠানের পূজা অর্চনা ঘর দরজা মেরামত সহ উন্নয়ন মূলক কাজে ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছেন সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের সভাপতি মিন্টু বৈদ্য এবং শনি মন্দিরের সভাপতি  নির্মল বিশ্বাস। উল্লেখিত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিতা জয়ধর বলেন, এ টাকা সকল শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চেয়ার টেবিল মেরামতসহ উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেন বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। তবে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী গ্রাম্য বিচার শালিশে সম্পৃক্ত হতে পারবে না।

কোটালীপাড়া পূজা উদজাপন পরিষদের সভাপতি প্রফেসর কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাস জানান, এ ব্যপারে আমি কোন মন্তব্য করব না।

এ বিষয়ে কোটালীপাড়া থানার এএসআই আব্দুর রশিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে  তিনি বলেন- মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করেছি মনি মোহন বাড়ৈর ছেলে ৭ম শ্রেনীর ছাত্রের কাছ থেকে, উপানন্দ বৈদ্যের অভিযোগ পেয়ে তদন্তে গিয়ে সত্যতা পাইনি।