
গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুর মহানগরের কাশেমপুর ট্রলার ঘাটে সিটি করর্পোরেশনের নাম ভাঙ্গিয়ে ট্রলারে চাঁদাবাজির রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। যাতায়াতের সুবিধাদার্থে স্বল্প সময়ে কাশিমপুর থেকে নগরের ১৪নং ওয়ার্ডের ভাঙ্গাব্রিজ হয়ে শহরে প্রবেশের এই নদীপথকে বেচে নিয়েছেন অনেকে। দুই কিলোমিটার নদী আর খাল অতিক্রম করে যাত্রী সেবা দিয়ে আসছেন ইঞ্জিন চালিত নৌকা মাঝিরা। এ বাবদ, কাশেমপুর ঘাটে ট্রলার প্রতি মাঝিদের প্রতিদিন ৫০-৬০ টাকা চাঁদা গুনতে হয়। এছাড়াও সোমবার হাটের দিন গুনতে হয় অতিরিক্ত ১০০ টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভ্রমণ পিপাসুরা বর্ষা মৌসুমে নদী পথে বিনোদনের জন্য গাজীপুর শহর ঘেঁষে বয়ে যাওয়া তুরাগ নদীকে ব্যবহার করে আসছেন। নৈাকা ভাড়া করার ঘাটগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- গাজীপুর মহানগরের ইসলামপুরের ফেউছাঘাট ও কাশিমপুর নৌকা ঘাট। যাতায়াতের সুবিধা আর সময় বাঁচাতে বহু আগ থেকেই বাসন ও কাশিমপুর দুই থানার জনসাধারণ তুরাগ নদীর এই নৌকা ঘাট ধরে পারাপার হয়ে আসছেন। দুই থানার যোগাযোগ স্থাপনে নৌকা ও ঘাটগুলোর ভূমিকা অপরিসীম। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এই দুই থানার জনসাধারণের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরো সহজ করার জন্য একটি ব্রীজ নির্মাণের।
নৌকায় করে যাত্রী পারাপারের মধ্যমে ওই দুই থানা এলাকার প্রায় শ’খানেক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছেন। পানি মৌসুমে মাঝিদের উপার্জন ভালো থাকলেও শীত মৌসুমে বেকার সময় পার করতে হয় তাদেরকে। এক মৌসুমের রোজগার দিয়েই বছর পাড় করতে হয়। অভিযোগ রয়েছে, এসব নৌকা মাঝিদের কাছ থেকে ইঞ্জিন চালিত প্রতি নৌকা থেকে ৫০-৬০ টাকা চাঁদা তুলে আসছেন একটি অসাধু মহল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নৌকা মাঝিরা জানান, ফেউছাঘাট থেকে কাশেমপুর ঘাটে প্রতিদিন একশো’র অধিক ইঞ্জিন চালিত নৌকা চলাচল করে। নৌকা প্রতি একটি অসাধু মহলকে কাশিমপুর ঘাটে ৫০-৬০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। চাঁদাবাজরা গাজীপুর সিটি করর্পোরেশনের ইজারার কথা বলে বছরের পর বছর চাঁদা উত্তোলন করে আসছে। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে চাঁদাবাজদের দ্বারা লাঞ্ছনার শিকার হতে হয় তাদেরকে।
মাঝিরা জানান, তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে এমনিতেই তাদের রোজগার কমে গেছে, পূর্বের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বাড়তি ভাড়া দিতে চায় না যাত্রীরা। এর উপর আবার সিটি কর্পোরেশনের নাম ভাঙ্গিয়ে নেওয়া হচ্ছে চাঁদা! কে বা কারা এই চাঁদা উত্তোলন করছে? ভয়ে এমন প্রশ্নে নাম প্রকাশে নারাজ মাঝিরা।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন অঞ্চল-৬ এর সম্পত্তি কর্মকর্তা নুরুজ্জামান মৃধা জানান, কাশেমপুর ঘাটে অবৈধভাবে চাঁদাবাজির একটা অভিযোগ ছিল। সেটা এখন বন্ধ আছে। তবে বর্তমানে সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় ট্রলার প্রতি ৫০ টাকা পরীক্ষামূলক ভাবে খাস কালেকশন আদায় করা হচ্ছে।