Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সম্পাদকীয় / সড়ক পথে চাঁদাবাজি বন্ধ হোক - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

সড়ক পথে চাঁদাবাজি বন্ধ হোক

February 06, 2023 05:55:29 PM   সম্পাদকীয়
সড়ক পথে চাঁদাবাজি বন্ধ হোক

প্রতিদিন সড়কে চলছে চাঁদাবাজি। জিম্মি হয়ে পড়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। চাঁদা না দিলে গাড়ি থামিয়ে রাখা হয়। মাঝ রাস্তায় যাত্রীদের নিয়ে বিড়ম্বনা এড়াতে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা লাইনম্যানদের হাতে নির্ধারিত চাঁদার টাকা তুলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন শ্রমিকরা। শুধু বাসষ্ট্যান্ডেই নয় টাকা দিতে হয় পথে পথে। চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের কাছে পরিবহন শ্রমিকরা অসহায় হয়ে পড়েছে। সড়কে গাড়ির চাকা ঘুরলেই দিতে হবে টাকা। এখন গাড়ি ছাড়ার সময়ই নির্ধারিত স্থানে অনেকটা গোপনে গুঁজে দেওয়া হচ্ছে টাকা। তবে মাঝপথে থাকে পুলিশের বাগড়া, পুলিশের পকেটে টাকা পড়লেই গাড়ি ছোটে নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
ঢাকাসহ বড় জেলাগুলোর বাস টার্মিনাল ও স্ট্যান্ডগুলোতে এই অনাচার অনেকটাই প্রকাশ্য। কিন্তু জেলা উপজেলা এবং পৌর এলাকাগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে অটোরিকশা ও ইজিবাইক কেন্দ্রিক চাঁদাবাজি। এরসঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারদলীয় কিছু নেতার নাম আসছে। বিভিন্ন সংগঠনের নামে-বেনামে চাঁদা তোলা হচ্ছে। সড়কপথে বিভিন্ন সংগঠন, পুলিশ ও ব্যক্তির নামে পরিবহণ থেকে চাঁদাবাজি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পুলিশের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ থাকলে তা জানাতে চালু হয়েছে হটলাইন, তবে মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নামে চাঁদা আদায় বহাল থাকছে। মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নামে প্রতি ট্রিপে ৩০ টাকা করে মোট ৬০ টাকা আদায় করা যাবে। প্রতিটি জেলায় নির্দিষ্ট স্থানে এ চাঁদা আদায় করবেন দুই সংগঠনের প্রতিনিধিরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পথে পথে চাঁদা গুনতে হচ্ছে গাড়িচালকদের। আর এই চাঁদার টাকার ষোলো আনাই তুলে নেওয়া হচ্ছে যাত্রীদের পকেট থেকে। এ কারণে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ইচ্ছামতো। এই ভাড়ার একটি বড় অংশ চলে যাচ্ছে চাঁদাবাজদের হাতে। এই চাঁদাবাজদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন যানবাহনের চালকরা। পুলিশ ও বিভিন্ন জেলায় এক শ্রেণির শ্রমিক নেতাদের চাঁদা দেওয়ার কারণে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে। চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটই ভাড়া ও চাঁদার অঙ্ক নির্ধারণ করে দিচ্ছে। সড়ক-মহাসড়কে নানামুখী চাঁদাবাজির কারণে নিত্যপণ্য ও তরিতরকারির দাম নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। শক্তিশালী টাস্কফোর্স গঠনসহ সরকার নানা উদ্যোগ নিলেও দৃশ্যত কোনো সুফল পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ।
পণ্য পরিবহনের অতিরিক্ত খরচ, ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজি, অব্যবস্থাপনা এবং সর্বোপরি পণ্য হাতবদলের সংখ্যা বেশি হওয়ায় ভোগ্যপণ্যের বাজার দিন দিন অস্থির হয়ে উঠছে। দেশে সবজির একটি বড় উৎস বগুড়ার মহাস্থান হাট। বগুড়া শহরের ১২ কিলোমিটার উত্তরে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে অবস্থিত এই হাট থেকে ঢাকা বা চট্টগ্রামে আসতে আসতেই সব ধরনের সবজির দর বেড়ে যাচ্ছে ১০ থেকে ২০ গুণ পর্যন্ত। এর বড় কারণ পণ্য পরিবহনের পথে পথে চাঁদাবাজি। পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। এ লক্ষে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত পদক্ষেপ নেবে সেটাই কাম্য। চাঁদাবাজ যে বা যারাই হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।