Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / শরীয়তপুরে ‘হিযবুত তাহরীর’ বলে হেযবুত তওহীদের ৪ নারী সদস্যকে হেনস্তা! - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

শরীয়তপুরে ‘হিযবুত তাহরীর’ বলে হেযবুত তওহীদের ৪ নারী সদস্যকে হেনস্তা!

March 20, 2025 09:20:34 PM   স্টাফ রিপোর্টার
শরীয়তপুরে ‘হিযবুত তাহরীর’ বলে হেযবুত তওহীদের ৪ নারী সদস্যকে হেনস্তা!

শরিয়তপুরে পরিকল্পিতভাবে ‘হিযবুত তাহরীর’ বলে গুজব সৃষ্টি করে হেযবুত তওহীদের ৪ নারী সদস্যকে হেনস্থার চেষ্টা করে একদল উগ্রবাদী ধর্মব্যবসায়ী। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ঘটনার সুরাহা হয়। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) জেলার জাজিরা উপজেলার ডুবিসায়বর বন্দর কাজিরহাট এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের নিয়মিত প্রচার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নিজ জেলায় জাজিরা থানার কাজীরহাট বাজারে ইসলামি দাওয়াতি কাজ করছিলেন ওই জেলারই বাসিন্দা তুলাসার এলাকার মিতু আক্তার (২৫), পশ্চিম সোনামুখি এলাকার ডলি আক্তার (১৯), তুলাসার এলাকার তমা রহমান (১৮) ও নড়িয়ার নসাশন এলাকার মাকসুদা বেগম (৪০)।

জানা যায়, তারা হেযবুত তওহীদের কিছু প্রকাশনা ও কালেমার দাওয়াত সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করছিলেন সাধারণ মানুষের মাঝে। এসময় একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী তাদেরকে নিষিদ্ধ ঘোষিত ‘হিযবুত তাহরীর’ এর সদস্য বলে হেনস্থার চেষ্টা করে। পরে সেখানে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হলে সংবাদ পেয়ে পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে। পুলিশ এসে হস্তক্ষেপ করলে পুরো ব্যাপারটা খোলাসা হয়ে যায়। সবাই বুঝতে পারে যে, ‘হিযবুত তাহরীর’ নয় তারা হেযবুত তওহীদের সদস্য। পরে পুলিশ তাদেরকে হেফাজত করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর হেযবুত তওহীদের কর্মীদের অভিভাবকদের ডেকে সসম্মানে তাদের কাছে হস্তান্তর করে।

হেযবুত তওহীদের নারী কর্মী মিতু আক্তার বলেন, রোজা রেখে আমরা ইসলামের দাওয়াতি কাজে বের হয়েছি। কাজিরহাট এলাকায় ইসলামি বই বিতরণকালে একদল উগ্র ধর্মব্যবসায়ী আমাদের কাজে বাধা দেয়। তারা সাধারণ মানুষের কাছে আমাদেরকে নিষিদ্ধ ‘হিযবুত তাহরীর’ এর কর্মী বলে মিথ্যাচার চালায়। আমরা সকলকে বোঝাতে চেষ্টা করি যে, আমরা ‘হিযবুত তাহরীর’ নই, আমরা হেযবুত তওহীদের সদস্য। তারপরেও তারা আমাদের উপর অযথাই চড়াও হয়। একপর্যায়ে আমাদের হাতের বই ছিনিয়ে নেয় তারা।

তমা রহমান বলেন, আমরা নারীরা কি ঘর থেকে বের হতে পারব না? আমাদের কি ইসলামের কাজ করার অধিকার নাই? আমরা রোজা রেখে ইসলামি দাওয়াতি কাজ করতে নেমেছি সেখানে আমাদেরকে হেনস্থা করা হচ্ছে। এটা কোনো স্বাধীন দেশের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না।  

হেযবুত তওহীদের শরিয়তপুর জেলা সভাপতি বায়েজিদ মালত বলেন, ‘হিযবুত তাহরীর’ নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হেযবুত তওহীদ নয়। নামের মিলের কারণে অনেকে বিভ্রান্ত হন। তবে কিছু উগ্রবাদী গোষ্ঠী রয়েছে তারা জেনেশুনে গুজব রটিয়ে বিভ্রান্থি ছড়িয়ে ফেৎনা সৃষ্টির পায়তারায় রত।  

তিনি বলেন, হেযবুত তওহীদ একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কারমূলক আন্দোলন। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বিগত ৩০ বছরে এই সংগঠন একটিও আইনভঙ্গ করেনি যা ইতিহাসে রেকর্ড। আমরা সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থভাবে মানবতার কল্যাণে কাজ করছি।

“আমাদের নিয়মিত প্রচারণা কর্মসূচির অংশ হিসেবে কাজীরহাট এলাকায় ৪ নারী কর্মী গিয়েছিল। তারা মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছিল। একশ্রেণির উগ্রবাদীরা পরিকল্পিতভাবে ‘হিযবুত তাহরীর’ আখ্যা দিয়ে সেখানে একটি ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায় -বলেন হেযবুত তওহীদের এই নেতা।”

এ বিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দুলাল আকন্দ বলেন, “আমরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে হেযবুত তওহীদের চার নারী সদস্যকে উদ্ধার করি। পরে তাদের অভিভাবকদের ডেকে তাদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে তাদেরকে।”

উল্লেখ্য, ‘হিযবুত তাহরীর’ এর সাথে বায়তুল মোকাররমের পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে ঘোলাটে পরিস্থিতির বিরাজ করছে। প্রকৃতপক্ষে হিযবুত তাহরীর এবং হেযবুত তওহীদ সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি সংগঠন। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে একটা উগ্রবাদী গোষ্ঠী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে মিথ্যা তথ্য দেয় এবং জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করে আসছে।