Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / অবন্তিকার মৃত্যুতে বিক্ষোভ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

অবন্তিকার মৃত্যুতে বিক্ষোভ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে

March 17, 2024 01:22:48 PM   নিজস্ব প্রতিনিধি
অবন্তিকার মৃত্যুতে বিক্ষোভ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর থেকে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' ব্যানারে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে বটতলা এলাকায় এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।

এসময় নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান হাসান শুভ বলেন, “শুধু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে না দেশের সব পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা ঘটছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ছাত্রী বিচার চেয়ে দিনের পর দিন অসহায়ত্ব প্রকাশ করে গেছে। তার হত্যার জন্য দায়ী তার বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীলরা। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।"

কুমিল্লা সরকারি কলেজের প্রয়াত অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের মেয়ে অবন্তিকা শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লার বাসায় গলায় রশি বেঁধে ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।

মৃত্যুর ১০ মিনিট আগে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এ ঘটনার জন্য আম্মান নামের এক সহপাঠীকে দায়ী করেছেন। একইসঙ্গে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকেও এ ঘটনার জন্য দায়ী করেন।

আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আগে নিজের ফেইসবুক পেইজে দীর্ঘ একটি লেখা পোস্ট করেন অবন্তিকা।


তিনি লেখেন, “আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম।”

জাহাঙ্গীরনগরের সমাবেশে সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সুমাইয়া জাহান বলেন, “যিনি মারা গেছেন তিনি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের মানসপটে যদি অপরাধীদের আশ্রয় দেওয়ার প্রবণতা থাকে, তাহলে আমরা নারীরা দেশের কোথাও নিরাপদ না। এই ঘটনায় একজনের নাম উঠে এসেছে সে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, অন্যজন একজন সহকারী প্রক্টর।

“এই যে এতো নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলা হয়, আমাদের আসল চিত্রটা ফাইরুজ অবন্তিকার ঘটনার মধ্য দিয়ে দেখা যায়। এটি একটি খুন৷ এর সাথে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে দেশের প্রচলিত আইনে শাস্তি দিতে হবে।"

সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলি বলেন, “রাষ্ট্রই যখন নিপীড়ক, ধর্ষক, দুর্নীতিগ্রস্ত- তখন বিচার আসলে কার কাছে চাইব? এই রাষ্ট্র একটা পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় সবার আগে যে নামটি এসেছে আশ্রয়দাতা হিসেবে, তিনি একজন সহকারী প্রক্টর।

“প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা ঘটছে। তাহলে আমাদের প্রশ্ন করতেই হয় যে, বাবা-মায়েরা আমাদের সবচেয়ে নিরাপদ মনে করে শিক্ষকদের কাছে তুলে দিয়েছিলেন কিন্তু তারা ক্ষমতার মধ্যে এতটাই ঢুকে গেছে আমাদেরকে ছাত্র মনে করছে না।"

অবন্তিকার মৃত্যুর খবর পেয়ে শুক্রবার রাত থেকেই প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন তার সহপাঠী ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার সকালে রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে বহিষ্কার ও দ্বীন ইসলামকে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন দ্বীন।

এদিন রাতেই তাদের দুজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে কুমিল্লায় মামলা করেছেন অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম। রাতেই আসামিদের গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।