Date: October 25, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / রাজনীতি / উপদেষ্টা মাহফুজ ও আসিফ কি ভোটের ময়দানে নামছেন? - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

উপদেষ্টা মাহফুজ ও আসিফ কি ভোটের ময়দানে নামছেন?

October 24, 2025 07:21:33 PM   অনলাইন ডেস্ক
উপদেষ্টা মাহফুজ ও আসিফ কি ভোটের ময়দানে নামছেন?

অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে শপথ নেওয়া দুই উপদেষ্টা—মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ—আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা, তা নিয়ে এখন রাজনীতির অঙ্গনে চলছে জোর আলোচনা।

আসিফ মাহমুদ এরই মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হবেন না কি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবেন—সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন। অন্যদিকে, মাহফুজ আলমও প্রার্থী হতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তার ভাই মাহবুব আলম। কয়েকদিন আগে এনসিপির এক সভায় মাহবুব বলেন, তার ভাই মাহফুজ আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন।

এদিকে সম্প্রতি বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির কয়েকজন নেতা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কিছু উপদেষ্টার বিষয়ে আপত্তি জানান। এমন প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমে খবর আসে, সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে দুই শিক্ষার্থী উপদেষ্টাকে পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। যদিও এ বিষয়ে দুইজনের কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাননি। সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচন ঘিরে চলমান রাজনৈতিক সমীকরণের কারণে তারা আপাতত পদত্যাগের কথা ভাবছেন না।

জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন মাহফুজ, আসিফ ও নাহিদ ইসলাম। পরবর্তীতে নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করে যোগ দেন আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল—জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি)। তার পদত্যাগের পর সরকারের ভেতরে শিক্ষার্থী উপদেষ্টাদের প্রভাব কিছুটা কমে যায় বলে মনে করা হচ্ছে। তাই যদি বাকি দুইজনও পদত্যাগ করেন, তাহলে সরকারের সঙ্গে এনসিপির সম্পর্কেও টানাপোড়েন সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এনসিপির নেতারা অবশ্য দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ নিয়ে চলমান আলোচনাকে সন্দেহের চোখে দেখছেন। তাদের মতে, কেবল শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবেই নয়, আন্দোলনের নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা রক্ষার অংশ হিসেবে তারা সরকারে গেছেন। এখন তাদের বিরুদ্ধে পদত্যাগের দাবি বা রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগ একটি পরিকল্পিত প্রচারণা।

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন এ বিষয়ে বলেন, “যদি শিক্ষার্থী উপদেষ্টাদের ‘দলীয়’ হিসেবে দেখা হয়, তাহলে সরকারের আরও অনেকে আছেন যাদের অতীত রাজনৈতিক পরিচয় বা সম্পর্ক কোনো না কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত। কেবল শিক্ষার্থী উপদেষ্টাদের ক্ষেত্রেই বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ করা ঠিক নয়।”

তিনি আরও জানান, অনেক উপদেষ্টা আছেন যারা সরকারের ভেতর থেকেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে পরোক্ষভাবে সমর্থন করে যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে যদি রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগে পদত্যাগের দাবি তোলা হয়, তবে সরকার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অনেককেই পুনর্গঠনের আওতায় আনতে হবে।

ফলে স্পষ্ট হচ্ছে, মাহফুজ ও আসিফকে ঘিরে নির্বাচন-পূর্ব এই আলোচনার পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও কৌশলগত হিসাব। এখন দেখার বিষয়—তারা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেন কিনা, নাকি সরকারের ভেতর থেকেই থেকে যান এই অস্থির রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে।