Date: May 14, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / চট্টগ্রাম / কারাগার নির্মাণে শতবর্ষী পুকুর ভরাট, অভিযোগের তীর আ.লীগের সাবেক এমপি আবু জাহেরের দিকে! - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যা...

কারাগার নির্মাণে শতবর্ষী পুকুর ভরাট, অভিযোগের তীর আ.লীগের সাবেক এমপি আবু জাহেরের দিকে!

May 13, 2025 09:32:52 PM   অনলাইন ডেস্ক
কারাগার নির্মাণে শতবর্ষী পুকুর ভরাট, অভিযোগের তীর আ.লীগের সাবেক এমপি আবু জাহেরের দিকে!

কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৬১০ কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের আড়ালে ধ্বংস করা হয়েছে শতবর্ষী দুটি পুকুর ও ২২ একর প্রাকৃতিক জলাধার। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও পলাতক, হত্যা মামলার আসামি আবু জাহের রাতের আঁধারে গোমতী নদীর মাটি কেটে এই জলাধার ও পুকুর ভরাট করেন, যা পরিবেশ আইন ও প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এবং প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০ অনুযায়ী, কোনো পুকুর, খাল, নদী কিংবা প্রাকৃতিক জলাশয় ভরাট করা সম্পূর্ণ বেআইনি। তবে কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা পুকুরসহ ২২ একর জলাশয় বুলডোজারের নিচে চাপা পড়েছে।

ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৬৭ একর জমির মধ্যে দুটি পুকুর ও ২২ একরের বিশাল জলাধার ছিল। একসময় এই জলাশয়ে হাজারো অতিথি পাখির সমাগম হতো। পুকুরে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়েছিল। কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দও একসময় এই পুকুরে গোসল করেছিলেন, যার ছবি এখনো সংরক্ষিত আছে।

কিন্তু বর্তমানে দুটি পুকুর সম্পূর্ণভাবে ভরাট এবং অপরটি আংশিক ভরাটের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। বিশাল জলাধারটি রাতারাতি মাটি ফেলে সমতল করা হয়েছে এবং সেখানে গড়ে উঠেছে দশতলা চারটি ভবন।

সূত্র মতে, কারাগারের এই উন্নয়ন কাজটি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় প্রভাব খাটিয়ে সাবেক এমপি আবু জাহের ও তার ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। জলাধার ভরাটের ঠিকাদার ছিলেন আবু জাহের নিজেই। অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্পের কোটি কোটি টাকার কাজ তিনি নিজের প্রভাব খাটিয়ে দখলে রেখেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের কুমিল্লা অঞ্চলের উপ-পরিচালক মুসাব্বির হোসেন মোহাম্মদ রাজিব জানান, 'আমরা কারা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। বিষয়টি মন্ত্রিপরিষদ পর্যন্ত গিয়েছে। কাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত আছে, তবে তারা আমাদের অনুমতি না নিয়েই জলাধার ভরাট করেছে।'

গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ৬১০ কোটি টাকার প্রকল্পটি তাদের তত্ত্বাবধানে হলেও জলাধার ভরাটের বিষয়ে তিনি বলেন, 'খতিয়ান নাল জমি উল্লেখ আছে। পুকুর ভরাটের কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে, তবে কারা কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে।'

সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে রিজার্ভ গার্ডের প্রধান কারারক্ষী জানান, তিনি ব্যস্ত। পরে তাঁর সরকারি নম্বরে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। একইভাবে জেলার আব্দুল্লাহ আল-আমিনের নম্বরেও যোগাযোগ করা হলে সাড়া মেলেনি।

স্থানীয়রা এই অবৈধ কর্মকাণ্ডে প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনা এবং প্রাকৃতিক জলাধার রক্ষার দাবি জানিয়েছেন।