Date: May 11, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / রংপুর / বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্সের বিরুদ্ধে ভুল সেবা ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণ...

বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্সের বিরুদ্ধে ভুল সেবা ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ

September 18, 2024 09:16:07 PM   উপজেলা প্রতিনিধি
বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্সের বিরুদ্ধে ভুল সেবা ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক শিশু রোগীকে সঠিক সেবা না দিয়ে উল্টো শিশুর বাবা-মায়ের সাথে অশোভন আচরণ ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মো. সাইদুল ইসলাম বাবু নামের ভুক্তভোগী শিশুর বাবা মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন। অভিযুক্ত নার্স নূরজাহান বেগম বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে কর্মরত রয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১১ সেপ্টেম্বর রাতে পৌর এলাকার বেগমপুর গ্রামের মোছাঃ নাফিসা ইসলাম (৬) এর পেটে তীব্র ব্যথা শুরু হলে তার বাবা-মা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সিনিয়র স্টাফ নার্স নূরজাহান বেগম শিশুর হাতে অমানবিকভাবে ইনজেকশন পুশ করার কারণে সে নার্সকে দেখলেই ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। পরের দিনও ওই নার্স ইনজেকশন দিতে এলে, শিশুর মা কায়মুন্নাহার মেয়ের হাতে ধীরস্থিরভাবে ইনজেকশন পুশ করতে অনুরোধ করেন। এসময় নার্স নূরজাহান বেগম প্রচণ্ডভাবে রাগান্বিত হয়ে শিশুর মাকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে অসহনীয়ভাবে ক্যানোলার মধ্যে ইনজেকশন পুশ করার কারণে শিশু নাফিসা ইসলামের হাতে লাগানো ক্যানোলা খুলে যায়। তারপরও সেই নার্স ইনজেকশন পুশ করতে থাকেন। নার্সের পুশকৃত ইনজেকশন শিশুর হাতের ভ্যানে না গিয়ে মাংসের মধ্যে ঢুকে যায় এবং ক্ষতস্থান থেকে রক্ত বের হয়ে হাত ফুলে যায়। পরে ঘটনাটি মোবাইল ফোনে শিশুর মা শিশুর বাবাকে জানালে, শিশুর বাবা গিয়ে অভিযুক্ত নার্সের কাছে ঘটনার কারণ জানতে চাইলে, নার্স আরো রাগান্বিত হয়ে শিশুর বাবার সাথে দুর্ব্যবহার করেন এবং রোগীকে নিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে যেতে বলেন।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে নার্স নূরজাহান বেগম তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সেদিন কোনো অসদাচরণের ঘটনা ঘটেনি এবং শিশুটিকে স্বাভাবিকভাবেই ইনজেকশন পুশ করেছেন বলে জানান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম রসূল রাখি জানান, সিনিয়র স্টাফ নার্স নূরজাহান বেগমের বিরুদ্ধে একজন শিশু রোগী ও তার বাবা-মায়ের সাথে অসদাচরণের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর এই হাসপাতালে অনামিকা নামে এক গর্ভবতী মা সন্তান প্রসবের পরে কর্তব্যরত মিডওয়াইফ মোছাঃ কহিনুর বেগমের ভুল সেবার কারণে মায়ের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে রোগীর স্বজনেরা দিনাজপুর সদরে রোগীকে নিয়ে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা করান। এ নিয়ে রোগীর স্বজনদের সাথে নার্সদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় এবং ঐদিন রাতেই কর্তব্যরত চিকিৎসক উভয় পক্ষকে নিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করেন। কিন্তু নিজেদের ভুল না শুধরিয়ে পরের দিন নার্সরা উল্টো রোগীর স্বজনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

জানা যায়, প্রায়শই বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কিছু নার্স ভর্তিকৃত রোগী ও রোগীর স্বজনদের সাথে দুর্ব্যবহার করে থাকেন বলে ভুক্তভোগীরা জানান। তবে কিছু ভালো নার্সও রয়েছেন যারা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে থাকেন। বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যে সকল নার্স অপেশাদার আচরণ ও দুর্ব্যবহার করে থাকেন, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তাদের খুঁজে বের করে বদলি করা সহ বিভাগীয় শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগী রোগী ও স্বজনেরা।