
স্বাধীনতা সংগ্রামের অকুতোভয় বীর শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে জাতি। এ জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিজয় দিবসের প্রত্যুষে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। এরপরই শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করবেন দেশি-বিদেশি কূটনীতিক, বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, তিন বাহিনীর প্রধান ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ লাখো জনতা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় স্মৃতিসৌধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। সৌধস্তম্ভের চূড়া থেকে শুরু করে শহীদ বেদী ও পায়ে চলার পথসহ পুরো এলাকা ধুয়েমুছে করা হয়েছে চকচকে। সৌধ ফটক থেকে বেদী পর্যন্ত হাঁটা পথের লাল ইট সাদা রংয়ের ছোঁয়ায় শুভ্রতা ছড়াচ্ছে।
চত্বরজুড়ে শোভা পাচ্ছে লাল, নীল, বেগুনি, হলুদ, সাদাসহ বিভিন্ন বর্ণের ফুলের চারা। কৃত্রিম হ্রদে ফুটেছে লাল শাপলা। গাছগুলোর সৌন্দর্য্য বর্ধন করা হয়েছে। এরই মধ্যে স্মৃতিসৌধের ভিতর ও বাইরে শেষ হয়েছে আলোকসজ্জার কাজও। শেষে হয়েছে তিন বাহিনীর সুসজ্জিত দলের মহড়া।
বিকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকার নিরাপত্তা বেষ্টনী পরিদর্শনে আসেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি বলেন, এবার মহান বিজয় দিবসকে ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তার চাদরে স্মৃতিসৌধের পুরো এলাকা ঢাকা থাকবে। এরই মধ্যে আমরা সর্বসাধারণের প্রবেশ বন্ধ রেখেছি। আশপাশ এলাকায় যে জনবসতি আছে তাদের নাগরিকত্ব ফরম দিয়েছি। নতুন কোনো লোক এলাকায় প্রবেশাধিকার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে৷
তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ওয়াচ-টাওয়ার বসানো হয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করছে। আমিনবাজার থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন হাজার পুলিশ সদস্য এই নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।
এদিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজার থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত মহাসড়ক সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। দুপাশে নেতা-কর্মীদের ছবি সম্বলিত নানান ব্যানার ফেস্টুনও শোভা পাচ্ছে। সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, সৌধ চত্বর এলাকাজুড়ে ধোঁয়ামোছা ও অন্যান্য সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিদুল ইসলাম বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও এর আশপাশের এলাকা জুড়ে তিন স্তরের কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলা হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারও প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। স্মৃতিসৌধ এলাকাজুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা, নিরাপত্তা চৌকির, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। সাদা পোশাকে পুলিশের নজরদারি বাড়নোসহ নিরাপত্তার স্বার্থে সৌধের আশপাশের চলাচলকারীদেরও তল্লাশি করা হচ্ছে।