
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় মিষ্টি কুমড়ার ফলন দ্বিগুণ হলেও পাইকারের অভাবে জমিতেই কুমড়া পাকতে শুরু করেছে। দ্রুত বিক্রি করতে না পারলে বোরো চাষের মৌসুমে কৃষকরা জমি প্রস্তুত করতে সমস্যায় পড়বেন।
হাজীগঞ্জ উপজেলার ডাকাতিয়া নদী তীরবর্তী বলাখলা, শ্রীনারায়ণপুর ও অলিপুর গ্রামে প্রচুর মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে। এ বছর উপজেলায় প্রায় ৬১৮ হেক্টর জমিতে কুমড়ার চাষ করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। কৃষি বিভাগের মতে, এ অঞ্চলের উর্বর মাটির কারণে শাকসবজির আবাদ বাড়ছে।
কৃষকরা জানিয়েছেন, হাইব্রিড জাতের মিষ্টি কুমড়া চাষে সময়মতো ফলন ভালো হলেও পাইকারদের অনুপস্থিতি তাদের বড় সমস্যায় ফেলে দিয়েছে। বলাখাল এলাকার কৃষক জসিম উদ্দিন বলেন, “প্রতি বছর এ সময়ে ঢাকার কারওয়ান বাজার, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর থেকে পাইকাররা কুমড়া কিনতে আসে। কিন্তু এবার পাইকার নেই, আর কুমড়া জমিতেই নষ্ট হতে চলেছে।”
অলিপুর গ্রামের কৃষক ছিদ্দিক বলেন, “গত বছর প্রতি পিস কুমড়া ৫০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এবার পাইকারদের অভাবে ৬ থেকে ৭ কেজি ওজনের একটি কুমড়া মাত্র ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি করছি। তারপরও ক্রেতা পাচ্ছি না।”
হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম জানান, চলতি মৌসুমে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে। তবে পাইকারদের অনুপস্থিতি কৃষকদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, “কৃষকদের কুমড়া স্থানীয় ও পাইকারি বাজারে নিয়ে বিক্রি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে এ বিষয়ে আরও সহায়তা করা হবে।”
পাইকার না থাকায় কুমড়ার বাজারদর তলানিতে নেমে এসেছে। স্থানীয় বাজারেও কুমড়া বিক্রি করতে সমস্যায় পড়ছেন কৃষকরা। এতে তাদের আর্থিক ক্ষতি তো হচ্ছেই, পাশাপাশি জমি খালি করতে দেরি হওয়ায় বোরো চাষ নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
কৃষকরা দ্রুত পাইকারি বাজারে মিষ্টি কুমড়া বিক্রির সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।