
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, জয়পুরহাট:
জয়পুরহাটের পাঁচটি উপজেলার মাঠে মাঠে এখন ইরি-বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। চলতি মৌসুমে জেলায় বাম্পার ধান উৎপাদন হয়েছে। পাকা ও আধাপাকা ধানে ভরে গেছে মাঠ। সদর, আক্কেলপুর, কালাই, ক্ষেতলাল ও পাঁচবিবি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুরোদমে চলছে ধান কাটার কাজ।
কৃষকেরা জানান, এবার কাটারি, জিরা ও সুবলতা জাতের ধান প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকায়। এতে কিছুটা লাভ পাচ্ছেন তারা। তবে ঝড়-বৃষ্টি হলে ধানের দাম পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে কৃষকেরা সরকারের নজরদারিও প্রত্যাশা করছেন।
জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) সাদিয়া সুলতানা জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ৬৯ হাজার ৬৮৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩৭৩ টন চাল। এর মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ ধান ইতিমধ্যেই কাটা হয়ে গেছে। তিনি জানান, কৃষকদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শসহ বিভিন্ন সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আক্কেলপুর উপজেলার সোনামুখি ইউনিয়নের কৃষক হাবিজার রহমান জানান, তার প্রতি বিঘায় উৎপাদন হয়েছে ১৮ থেকে ২২ মণ ধান, আর খরচ হয়েছে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা। এতে বিঘাপ্রতি ৪ থেকে ৬ হাজার টাকা লাভ হতে পারে বলে তিনি আশাবাদী।
একই ইউনিয়নের কৃষক জয়নাল হক জানান, যারা নিজস্ব জমিতে ধান করেছেন তারা কিছুটা লাভবান হবেন, কিন্তু যারা বর্গা জমিতে চাষ করেছেন তারা লোকসানের মুখে পড়বেন। তিনি বলেন, এক বিঘা জমি বর্গা নিতে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ পড়ে। এ বছর তিনি ৮ বিঘা জমিতে ধান করেছেন। শুধু কাটার খরচই হয়েছে ৬ হাজার টাকা। বিঘাপ্রতি মোট খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। শ্রমিক, সেচ, কীটনাশকসহ সব কিছুর দাম বেশি হওয়ায় লাভের সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে।
জেলার হাটগুলোতে বর্তমানে ধান বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বাড়তি দামে প্রতি মণ। কৃষকেরা মনে করছেন, বাজার স্থিতিশীল থাকলে ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লাভের মুখ দেখতে পাবেন তারা।