
ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের সালথায় গ্রাম্য দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে বকুল মোল্যা নামে এক কৃষকের উপর হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুঁপিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে সে গুরুত্বর আহত অবস্থায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় মহিলাসহ আরো অন্তত ১২জন আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) বিকালে উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের তুগুলদিয়া গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেনের সমর্থক মুন্নু মোল্লা গং ও আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার সাজ্জাদ হোসেনের সমর্থক আতিক মাতুব্বর গংদের মধ্যে এই হামলার ঘটনা ঘটে। গুরুত্বর আহত বকুল মোল্যা আনোয়ার হোসেনের সমর্থক ও তুগুলদিয়া গ্রামের মৃত জলিল মোল্লার পুত্র।
শুক্রবার (২১ এপ্রিল) বিকালে সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগীরা জানায়, আতিক মাতুব্বর গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে বিভিন্ন সময় আমাদের ভয়ভীতি ও মারধর করে আসছে। বর্তমান সাজ্জাদের সাথে মিশে আরো বেড়ে গেছে। আমরা তাদের সামনে দিয়েই যেতে পারি না। ঘটনার দিন মুন্নু মোল্যার ছেলে লালচান গোসল করতে গেলে আতিকের লোকজন বাঁধা সৃষ্টি করে তাকে মারধর শুরু করে। পরবর্তীতে চিৎকার শুনে বকুল মোল্যা, হারেচ মোল্যাসহ আমাদের লোকজন এগিয়ে যায়। এ সময় বকুল মোল্যাকে ধারালো অস্ত্র রামদা ও চাইনিজ কুড়াল দিয়ে ধাওয়া দেয় তারা। বকুল মোল্যা অসুস্থ থাকায় মাটিতে পড়ে যায়। এরপর আতিক মাতুব্বর, তার ছেলে তাহের মাতুব্বর, খায়ের মাতুব্বর, ভাই ইকরামসহ ১৫/১৬ জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান হাত ও দুই পা কুুঁপিয়ে জখম করে এবং ডান হাত ভেঙে ফেলে। পরে উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হয়। এ সময় হারেজ সহ আরো দুজনকে ফরিদপুর মেডিকলে নেয়া হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) রাতে হাসপাতালে গিয়ে কথা হয় বকুল মোল্যা ও তার ছেলে তুহিন মোল্যার সাথে।
এ সময় বকুল মোল্যা জানায়, লালচানের চিৎকারে আমি এগিয়ে যাই। এ সময় ওরা আমাকে ধাওয়া দিলে পড়ে যাই। তখন আতিক মাতুব্বর বলে, ওরে মেরে ফেল, ওরে বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। সাথে সাথে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোঁপাতে থাকে। তখন আমি জ্ঞাণ হারিয়ে ফেলি। ওরা আমার হাত কুঁপিয়ে ভেঙে দিয়েছে। পুলিশ না ঠেকালে আমাকে ওরা মেরেই ফেলতো। আমি ওদের ফাঁসির দাবি জানাই, ওরা বেঁচে থাকলে আমাকে ও আমার ছেলেদের বাঁচতে দিবে না।
বকুল মোল্যার ছেলে তুহিন বলেন, কয়েকদিন যাবৎ আতিকরা তাদের দলে মেশার জন্য চাপ সৃষ্টি করে এবং এক পর্যায়ে আমাদের কাছে একলক্ষ টাকা দাবি করে। সেই টাকা না দেয়ায় আমার আব্বাকে অমানসিকভাবে কুঁপিয়েছে ওরা। আমি ওদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।
বকুলের স্ত্রী জবেদা বেগম বলেন, আমার স্বামী যেভাবে কুঁপিয়েছে তা খুবই ভয়ংকরভাবে। মানুষ মানুষকে এভাবে কোঁপায় কিভাবে? আমি জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা সাজ্জাদ জানান, ওরা আমার কোনো কর্মীনা। ওদের সাথে আজ পর্যন্ত আমি বসি নাই, অনেককে চিনিওনা। তারা কিভাবে আমার কর্মী হয়। আমি চাই এলাকায় শান্তি নিশ্চিত হোক।
এ বিষয়ে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ সাদিক বলেন, ঘটনাটি নিয়ে এজাহার পেয়েছি। এটি মামলায় রুপান্তর হবে এবং আসামীদের গ্রেপ্তারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।