Date: May 08, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / রংপুর / আধুনিক খেলনার দাপটে ঐতিহ্য হারাচ্ছে সৈয়দপুরের তৈরি কাঠের খেলনা - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

আধুনিক খেলনার দাপটে ঐতিহ্য হারাচ্ছে সৈয়দপুরের তৈরি কাঠের খেলনা

October 04, 2024 07:53:51 PM   উপজেলা প্রতিনিধি
আধুনিক খেলনার দাপটে ঐতিহ্য হারাচ্ছে সৈয়দপুরের তৈরি কাঠের খেলনা

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
আধুনিক খেলনার ভিড়ে সৈয়দপুরের ঐতিহ্যবাহী কাঠের খেলনা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। একসময় নীলফামারীর সৈয়দপুরের বাঙালিপুর এলাকা ছিল কাঠের খেলনার কর্মশালাগুলোর ঠুকঠাক আওয়াজে মুখরিত। সেখানে ট্রাক, ঠেলা গাড়ি, কেরকেরি গাড়ি, ঢোল গাড়িসহ নানা আকর্ষণীয় কাঠের খেলনা তৈরি করা হতো। কারিগররা দিনরাত পরিশ্রম করে এসব খেলনা তৈরি করতেন। কেউ খেলনার ফ্রেম তৈরি করতেন, কেউবা রং করতেন, আবার কেউ খেলনার চাকা লাগাতেন।

এসব কাঠের খেলনা সৈয়দপুরের বাঙালিপুরে তৈরি করা হতো, যা ঈদ, পহেলা বৈশাখ, মেলা কিংবা অন্যান্য উৎসবে শিশুদের খেলনা হিসেবে বিক্রি হতো। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ ছিল এই খেলনাগুলো। একসময় কাঠের এই খেলনার চাহিদা অনেক বেশি ছিল, তবে এখন প্লাস্টিকের খেলনার দাপটে কাঠের খেলনা হারিয়ে যেতে বসেছে। ফলে এই খেলনা তৈরির কারিগররা চরম বিপাকে পড়েছেন।

একসময় সৈয়দপুরের প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ এই পেশায় যুক্ত ছিলেন, তবে এখন বিক্রি ও চাহিদা কমে যাওয়ায় তাদের জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে। তার পরও অনেকে এই পরিবেশবান্ধব খেলনাগুলো টিকিয়ে রাখতে কাজ করছেন।

কাঠের খেলনা কারিগর সেলিম উদ্দিন জানান, তার পূর্ব পুরুষরা এই পেশায় জড়িত ছিলেন, এবং তিনি তাদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এখনো এই পেশায় কাজ করছেন। তবে ঈদ বা পূজা ছাড়া এই খেলনার বিক্রি নেই বললেই চলে। প্লাস্টিকের খেলনার কারণে কাঠের খেলনার চাহিদা অনেক কমে গেছে। আগে দিনে প্রায় ১ হাজার খেলনা বিক্রি হতো, এখন পুরো বছরেও ১৫ হাজার বিক্রি হয় না।

সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালিপুর এলাকার বাসিন্দারা জানান, একসময় এই কাঠের খেলনা ব্যাপকভাবে ব্যবহার হতো, কিন্তু এখন প্লাস্টিকের খেলনার কারণে এই শিল্প বিলুপ্তির পথে।

সেতু বন্ধন যুব উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা আলমগীর হোসেন বলেন, যারা এখনো কাঠের খেলনার পেশাকে টিকিয়ে রেখেছেন, তাদের জন্য সরকারি ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। এই খেলনাগুলো শুধু ঐতিহ্য নয়, শিশুদের জন্যও নিরাপদ।

বিসিকের সৈয়দপুর শিল্পনগরী অফিসের সহকারী প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, কাঠের খেলনার এই ঐতিহ্য দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে, তবে কয়েকটি কারখানা এখনো টিকে আছে। সরকার তাদের সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে।