Date: May 08, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / রংপুর / রৌমারীতে পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, চরম ভোগান্তিতে এলাকাবাসী - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

রৌমারীতে পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, চরম ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

October 06, 2024 07:33:04 PM   উপজেলা প্রতিনিধি
রৌমারীতে পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, চরম ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মানকারচর, কালো নদী, ধরনী নদী এবং বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা জিঞ্জিরাম নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রৌমারী সদর, যাদুরচর ও শৌলমারী ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্লাবিত এলাকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্রামগুলো হলো নওদাপাড়া, চান্দারচর, রতনপুর, বেহুলারচর, মোল্লারচর, খাটিয়ামারী, বোল্লাপাড়া, এবং ব্যাপারীপাড়া।

বন্যার পানি আমন ধান, বাদাম, মরিচ, মাসকালাই, খেশারি কালাইসহ শাকসবজির প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে দিয়েছে। কৃষকেরা দ্রুত পানি নেমে যাওয়ার আশায় থাকলেও বর্তমানে ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া, ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাগুয়ারচর, ফলুয়ারচর, চর বাঘমারা, পালেরচর ও বড়চরের নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে।

রাস্তাঘাটে বন্যার পানি ওঠার কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এলাকার মানুষ এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হচ্ছে। রৌমারী স্থলবন্দরও তলিয়ে যাওয়ায় বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে, যার ফলে প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, “ধার দেনা করে ২ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম, কিন্তু হঠাৎ বন্যায় সব তলিয়ে গেছে।”
কৃষক আমিনুল ইসলাম জানান, “ছাগল বিক্রি করে এবং ঋণ করে ১৫ কাটা জমিতে শাকসবজি চাষ করেছিলাম। এখন সব তলিয়ে গেছে। আমি কিভাবে ঋণের টাকা শোধ করবো, আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে।”
কৃষক ফারুক মিয়া বলেন, “গরু বিক্রি করে ২ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছিলাম, কিন্তু পানি সব তলিয়ে দিয়েছে।”

রৌমারী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল রাজ্জাক জানান, “কয়েকদিনের বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে আমার ইউনিয়নের কিছু গ্রাম পানিবন্দি হয়েছে। যদি আরো কয়েকদিন পানি জমে থাকে, তাহলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, “বন্যার ফলে আমন ধান, শাকসবজি, বাদামসহ ১ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি নেমে গেলে কিছুটা ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হবে, তবে দেরি হলে কৃষকেরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।”

এ পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে এবং এলাকাবাসীর দুর্ভোগও চরমে পৌঁছাতে পারে।